পঞ্চায়েত ভোটের পর ফের বাংলায় হত্যার রাজনীতি শুরু

453

নিজস্ব সংবাদদাতা : ফের শিরোনামে অনুব্রত মন্ডলের বীরভূম। ফের শুরু হত্যা ও লাশের রাজনীতি। একদিকে খয়রাশোলের গুলিবিদ্ধ তৃণমূল ব্লক সভাপতির মৃত্যু, অন্যদিকে লাভপুরে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পঞ্চায়েত ভোটের পর লোকসভা ভোটের আগেই কি ফের হত্যার রাজনীতি শুরু ?

খয়রাশোলে তৃণমূল নেতার গুলিতে মৃত্যুর পর তৃণমূল নেতাদের তরফ থেকে আঙুল তোলা হয় বিজেপির দিকে। এদিকে, দুষ্কৃতীদের গুলিতে তৃণমূল ব্লক সভাপতির মৃত্যুর মাঝেই সোমবার সকালে লাভপুরে বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। বাংলার বিজেপি নেতারা এটিকে খুন বলে দাবি করে শাসকদলকে পাল্টা কাঠগড়ায় তুলেছে। পঞ্চায়েত ভোটের মত ফের কি শুরু হত্যার রাজনীতি ? উঠছে প্রশ্ন।

পঞ্চায়েত ভোটের পর বীরভূমের জেলা রাজনীতিতে তৃণমূল-বিজেপির দ্বৈরথ ফের নতুন করে মাত্রা পেয়েছে। গত রবিবার সকালে গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল কংগ্রেসের খয়রাশোলের ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ। তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লাগে । দুটি গুলি বের করা গেলেও একটি গুলি দীপক ঘোষের শরীরে ছিল। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়াইয়ের পর সোমবার দুপুর একটা নাগাদ মৃত্যু হয় দীপক ঘোষের। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।

বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন দীপক ঘোষ। এলাকায় তাঁর যথেষ্ট দাপট ছিল। রবিবার খয়রাশোল থেকে দীপক ঘোষ তার সঙ্গী ভোলা ঘোষকে নিয়ে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। অজয় নদীর উপর অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে পেরোনোর সময় সুপার ইঁট ভাটার সামনে তাদের উপর আর একটি মোটরবাইক নিয়ে হামলা চালায় তিনজন দুষ্কৃতী।

প্রথমে মুখ লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও পরে ভোজালি দিয়ে কোপ মারা হয় গোটা শরীরে। দীপক ঘোষের সঙ্গী ভোলা ঘোষ চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে ওই তিনজন আততায়ী পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষরক্ষা হল না। জেলা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে শাসকদলের একাংশ সরব হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগের তীর বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে।

অন্যদিকে, রবিবার রাত থেকেই লাভপুরের দাঁড়কা গ্রামের বাসিন্দা তাপস বাগদি নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের লোকেরা তাঁর খোঁজ শুরু করেন। সোমবার ভোরে, নদীর ধারে জঙ্গলে একটি গাছ থেকে তাপসের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরিবারের অভিযোগ, তাপসকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও, বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার কুণাল আগারওয়াল সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “লাভপুরের ঘটনাটি একটি সুইসাইড এর ঘটনা বলে প্রাথমিক অনুমান। তদন্ত চলছে।”

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিজেপি কর্মীর মৃত্যুকে তৃণমূলের সুপরিকল্পিত হত্যা ও তৃণমূল কর্মীর গুলিতে মৃত্যুকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বিজেপি কর্মীর মৃত্যুকে আত্মহত্যা ও তৃণমূল কর্মীর গুলিতে মৃত্যুকে বিজেপির সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে জানিয়েছেন।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ চলছে। কিন্তু প্রাণ হারাচ্ছেন গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ। পঞ্চায়েত ভোটের হত্যালীলা কি লোকসভা ভোটের আগে ফের শুরু হলো ? চিন্তা ও আশঙ্কা গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন