কথায় আছে; টলি পাড়া কাউকে ফেরায় না। ফেরায়নি পুরুলিয়ার সিদ্ধার্থ মন্ডলকেও। পুরুলিয়ার কাশীপুর মধ্যবাজারের ছেলে একসময় দাপিয়ে বেরিয়েছে সিনেমা পাড়া। কখনও নায়কের বন্ধু তো কখনও খলনায়কের ডানহাত; আবার পরান বন্দ্যোপাধ্যায়; খরাজ মুখোপাধ্যায়ের মতো তাবড় অভিনেতাদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে অভিনয় করেছেন। কিন্তু কোথায় এখন সেই চেনা মুখ? গ্ল্যামারের ভিড়ে গ্রামের প্রতিভা কি হারিয়ে গেল? একান্তে জানালো The News বাংলা-কে।
পুরুলিয়ায় পলিটেকনিক কলেজের হোস্টেলের ডাইনিং রুমে শুরু অভিনয়। মধ্যবিত্ত বাড়ির ছেলে সিদ্ধার্থের বাবা; মা পেশায় শিক্ষক-শিক্ষিকা। আর পাঁচ জনের মতোই তাঁর বাবা; মাও চাইতেন ছেলে সরকারী কোনও ভালো চাকুরী করুক । তাঁরা কখন গুরুত্ব দেননি সিদ্ধার্থের এই ক্রিয়েটিভ কাজকর্মের প্রতি ভালোবাসায়।
আরও পড়ুনঃ সম্প্রীতির নজির, ধর্ম নয় আসল মানুষের হাতে তৈরি হল শিবমন্দির
তাই লড়াইটা সহজ ছিল না সিদ্ধার্থের। বাড়ি থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে; পঞ্চকোট রাজ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পর পুরুলিয়া পলিটেকনিক কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং।

মেঘনাদ সাহা ইনস্টিটিউট থেকে বি.টেক; যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পোষ্ট ডিপ্লোমা; আইআইটি খড়গপুর থেকেও উচ্চশিক্ষার কোর্স। প্রথম অভিনয় ২০০৬ সালে। কলেজে পড়ার সময়েই ইটিভি বাংলার ‘মেগাস্টার’-এ অডিশনেই সুযোগ পেয়ে যান তিনি।
রূপসী বাংলায় ‘প্রফুল্ল’ মেগায় প্রথম কাজ। তারপর সানন্দা টিভিতে ‘নায়িকা’,রূপসী বাংলায় ‘প্রেমের ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ’-তে অভিনয়। স্বপ্নের দিকে পা বাড়াচ্ছিলেন তিনি।
প্রথম বড়পর্দায় অভিনয় ‘পাগলু ২’-তে জুনিয়ার আর্টিস্ট হিসাবে। এরপর ‘কানামাছি’ করার সময় তিনি রাজ চক্রবর্তীর নজরে আসেন। তারপর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাজ চক্রবর্তীর ‘প্রলয়’;’যোদ্ধা’;’পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’; ‘বোঝে না সে বোঝে না’;’কাঠমান্ডু’-তে কাজ করেন। সহপরিচালক হিসাবেও কাজ করেন কিছু সিনেমায়।
সম্প্রতি তিনি উমেশ শুক্লার পরিচালনায় ‘মোদি-জার্নি অফ কমন ম্যান’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করলেন। পাশাপাশি তিনি ‘উবাচ’ নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত। ভারতীয় ও গ্রীক মাইথলজি নিয়ে তাঁর অভিনীত নাটকগুলো সমালোচক দ্বারা উচ্চ প্রশংসিত হয়।
কিন্তু এইভাবে আর কতদিন? একটা বড় ব্রেক চাই এবার। না; নায়কের রোল পেতে হবে; এমন দাবী করেন না সিদ্ধার্থ। তিনি চান নিজের অভিনয় দেখানোর জায়গা।