ইমরানের সুরেই পাকিস্তানের পক্ষে মুখ খুললেন কাশ্মীরের এই নেত্রী

553
ইমরানের সুরেই পাকিস্তানের হয়ে মুখ খুললেন এই ভারতীয় নেত্রী/The News বাংলা
ইমরানের সুরেই পাকিস্তানের হয়ে মুখ খুললেন এই ভারতীয় নেত্রী/The News বাংলা

“পাকিস্তানকে আরও একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। ইমরান খানকে আরও একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। ভারতের উচিত সব জঙ্গি প্রমান পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া”। বুধবার দুপুরে এমন মন্তব্যই করলেন মেহেবুবা মুফতি সইদ। সারা দেশ যখন বদলা নেবার পক্ষে তখন পাক সহানুভূতির জেরে নিজের রূপ চেনালেন মেহেবুবা, বলছে বিজেপি।

জম্মু ও কাশ্মীরের একসময়ের ক্ষমতাসীন দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির(পিডিপি) প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মেহম্মদ সঈদ এর মৃত্যুর পর জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মেহেবুবা মুফতি সঈদ। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হন মেহবুবা মুফতি। তিনি বরাবর পাকিস্তানের ভক্ত বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। গোটা ভারত যখন প্রতিশোধের রাস্তায় হাঁটতে চায়, তখন মেহেবুবার মন্তব্য সেই অভিযোগকেই প্রমাণ করল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইমরানের হুমকির পরেই মেহেবুবা মুফতি সইদ এর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ভারতীয় সেনা আধিকারিকরাও।

পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সুরে সুর মিলিয়েই আবার ভারত-পাক আলোচনার জন্য সওয়াল করলেন মেহেবুবা। তিনি পরিস্কার বলেন, “পাকিস্তানকে আরও একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। ইমরান খানকে আরও একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। ভারতের উচিত সব জঙ্গি প্রমান পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া”। আর এর পরেই দেশ জুড়ে মেহেবুবার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পরেছেন আমজনতাও।

পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জইশ-ই-মহাম্মদের হামলার পরই পাকিস্তানকে একঘরে করেছে ভারত। পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেভারড নেশনস এর তকমা বাতিল করা হয়েছে। এমনকি নিজেদের হাইকমিশনারকে ‘প্রত্যাহারও’ করে নিয়েছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ।

“ভারত যদি আক্রমণ করে তাহলে তার উত্তরে পাল্টা জবাবও দেবে পাকিস্তান”, বলে এক ভিডিও বার্তায় ভারতকে মঙ্গলবারই হুঁশিয়ারি দেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলাওয়ামায় পাক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের হামলায় আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ-র ৪৯ জন জওয়ান শহিদ হন। ওই হামলার পর থেকেই বদলার দাবিতে সরব গোটা ভারত। উত্তেজনা বজায় আছে কাশ্মীরেও। আর এইসময়েই ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইমরান খান এমন মন্তব্য করেন।

এখানেই শেষ নয়। হিন্দু ধর্ম টেনে ভয়ঙ্কর হুমকিও দেওয়া হয়। ভারতের সব মন্দির উড়িয়ে দেবার হুমকি দেন পাকিস্তানের এক মন্ত্রী শেখ রশিদ আহমেদ। রশিদের শাসানি, “ভারতের কোন মন্দিরে আর ঘণ্টা বাজবে না”। তারপরেও মেহেবুবার বক্তব্য সমালোচনার ঝড় তুলে দিয়েছে গোটা দেশে। তাঁকে নিরক্ষর বলতেও ছাড়েননি বিজেপি নেতা থেকে শুরু করে আমজনতা ও প্রাক্তন সেনা কর্তারাও।

পাকিস্তানের জঙ্গিগোষ্ঠীই যে পুলওয়ামায় হামলা চালিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ রাখেনি মাসুদ আজহারের জইশ-ই-মহম্মদ। পাকিস্তানে বসেই যে ৪০ জওয়ানের প্রাণ কেড়ে নেওয়ার ছক কষা হয়েছিল, সেটাও স্পষ্ট আজহারের টেপ বার্তায়। এর পরেও প্রমাণ চেয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। উরি, পাঠানকোটের পরও প্রমান ও আলোচনা চেয়েছিল পাকিস্তান।

পুলওয়ামার পরেও, হামলায় পাকিস্তানের মদতের প্রমাণ চেয়েছেন ইমরান খান। দায় স্বীকার দূরে থাক, ভারতের উদ্দ্যেশ্যে তিনি হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। বলেছেন, “ভারত আক্রমণ করলে যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে পাকিস্তান”।
এরপরেও তাঁকে ও পাকিস্তানকে আরও একবার সুযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।

মঙ্গলবারই এক টুইট-বার্তায় মেহবুবা লিখেছেন, “পাঠানকোট কাণ্ডের যথাযথ প্রমাণ তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু অপরাধীকে দোষী সাব্যস্ত করার কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। কিন্তু পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে আর একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ তিনি সবে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন”। এরপরে বুধবার ফের এই ইস্যুতে মুখ খোলেন তিনি। আর তারপরেই দেশ জুড়ে উঠেছে কড়া সমালোচনার ঝড়।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন