
বেড নেই সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে; তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতার কথায়, করোনাকে লকডাউন করে; দ্বিতীয়া থেকেই কলকাতার রাস্তায় ঠাকুর দেখতে মানুষের ঢল। কলকাতায় উত্তরের শ্রীভূমি থেকে দক্ষিণে; দ্বিতীয়া থেকেই কোথাও কোথাও ভিড় উপচে পড়ছে। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রী ভূমি পুজোতে; মায়ের গায়ের ২৫ কেজি সোনার গয়না দেখতে ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। সোশ্যাল ডিসট্যান্স শিকেয় তুলে, মানুষের ভিড়; আতঙ্কিত করেছে চিকিৎসক মহলকে। তবে, তাতে হুঁশ নেই মানুষের। রীতিমত বাচ্চা বুড়ো নিয়েও; মণ্ডপে ভিড় করেছেন অনেকেই।
আরও পড়ুনঃ বাংলার বাড়ছে করোনা পজিটিভ রেট, ঘুম উড়েছে স্বাস্থ্য কর্তাদের, পুজো উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
রবিবারও ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা; প্রায় ৪ হাজার। এ দিন ফের রাজ্যে; সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ড স্পর্শ করেছে। এই পরিস্থিতি চললে; উৎসবের ভিড়ে সংক্রমণ কোথায় গিয়ে ঠেকবে; তাই নিয়ে ক্রমেই কপালের ভাঁজ চওড়া হচ্ছে; পুলিশ-প্রশাসন থেকে চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞদের। রবিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী; রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে; করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৮৩ জন।
দৈনিক নতুন সংক্রমণের নিরিখে; এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। শনিবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৮৬৫। রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল; ২ লক্ষ ৮১ হাজার ৫৩। রবিবারের বুলেটিনে, ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন; উত্তর ২৪ পরগনায় ৮৩৮ জন। কলকাতায় নতুন সংক্রমণ ৮১৩। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী; রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের।
আরও পড়ুনঃ পুজো হলেও উৎসব বাদ, মমতার বাংলাকে ‘শিক্ষা দিল’ হাসিনার বাংলা

সমান তালে উদ্বেগ বাড়িয়েছে; ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। দীর্ঘদিন ধরে সংক্রমণের হার ৮ এর ঘরে থাকার পর; রবিবার তা পৌঁছে গিয়েছে ৯.১৫ শতাংশে। শনিবার এই হার ছিল ৮.৯০ শতাংশ এবং শুক্রবার ছিল ৮.৭২ শতাংশ। পুজোর পরে করোনা পরিস্থিতি, উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে বলে; চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ বারবার সতর্ক করছেন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে চিঠিও দিয়েছেন। হাসপাতাল, নার্সিংহোমগুলিতে বেডের আকাল; হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
এমনিতে করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই; হাসপাতাল-নার্সিংহোমে বেড মিলছে না বলে; ভুরি ভুরি অভিযোগ ছিল। সরকারি হাসপাতালে বেড না পেয়ে; মারা গেছে বেশ কিছু আক্রান্ত। বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও; ইতিমধ্যেই ঠাসাঠাসি অবস্থা। হাতে টাকা নিয়ে ঘুরলেও; বেড পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিশেষ করে, কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনার; কোভিড হাসপাতালগুলিতেও কার্যত ঠাঁই নেই-ঠাঁই নেই রব উঠেছে।
পুজোর ভিড় করোনা আবহে কী বিপদ ডেকে আনবে; তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্তারা। তবে তাতে কোন হুঁশ নেই আমজনতার। মুখ্যমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন; করোনাকে লকডাউন করে রাস্তায় নেমে ঠাকুর দেখুন। আর ঠিক সেটাই করছেন মানুষ।