“সিঙ্গুরের পাঁচিল ভেঙে আগমন; বিশ্বভারতীর গেট পাঁচিল ভেঙে বিসর্জন”; সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনটাই বলছেন সাধারণ মানুষ। “কেউ আবার বলছেন, টাটায় উত্থান; টেগোরে পতন”। শুরুটা কি হয়; গেট আর পাঁচিল ভাঙা দিয়েই? ১২ বছর আগে, সিঙ্গুরে টাটা কারখানার গেট আর পাঁচিল ভেঙে; বাংলা জুড়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন; তৃণমূল নেত্রী। বাকিটা ইতিহাস। সিঙ্গুর সরণি বেয়েই; সোজা মহাকরণে পৌছে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৭ জুন ২০০৮; মমতার নেতৃত্বে, সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানার গেট ও পাঁচিল ভাঙলেন আন্দোলনকারীরা। এক যুগ পরে, ১৭ আগস্ট ২০২০; তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরির নেতৃত্বে; আন্দোলনকারীরা ভাঙল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর গেট ও পাঁচিল।
“কৃষি আমাদের ভিত্তি; শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ”; এই আপ্তবাক্য আওড়াতে আওড়াতে; সিঙ্গুরে তিনফসলী ১০০০ একর কৃষি জমি; গায়ের জোরে কেড়ে নিয়ে টাটা-দের কাছে জলের দরে বেচে দিয়েছিলেন; তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। অভিযোগ, পুঁজিবাদের নির্লজ্জ দালালি করতে গিয়ে; হাজার হাজার মানুষকে পথে বসাতে চেয়েছিল বাম সরকার। তবে এই নিয়ে অনেকেই বলেন; সিঙ্গুর থেকেই বুদ্ধদেব বাবু; রাজ্যে শিল্পের শুভ সুচনা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলন; বামেদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে দেয় নি।
আরও পড়ুনঃ কবিগুরুর বিশ্বভারতীতে নৈরাজ্য, কেন চুপ বাংলার বুদ্ধিজীবী ও রবীন্দ্রপ্রেমীরা

সরকারের একটা সিদ্ধান্তে শান্ত সিঙ্গুর; বদলে গিয়েছিল আন্দোলনের অগ্নিভূমিতে। সিঙ্গুরের মাটিই লিখে দিল; কৃষক বিদ্রোহের নতুন অধ্যায়। যাঁর নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকরা জানিয়ে দিলেন; গায়ের জোরে বহুফসলি জমি অধিগ্রহণ তাঁরা মানবেন না। শুরু হল আন্দোলন। সিঙ্গুরের প্রতিবাদে, অনিচ্ছুক কৃষকদের পাশে; দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই মনে করেন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামই ছিল; বামেদের ওয়াটারলু। আর মমতার আবাহনের প্রস্তুতি।
এক যুগ পরে, ফের এক পাঁচিল আর গেট ভাঙার ঘটনা এই বাংলায়। এবারও গেট পাঁচিল ভেঙেছে সেই তৃণমূল নেতা সমর্থকরাই। বিশ্বভারতীর তাণ্ডবের ঘটনায়, শান্তিনিকেতন থানায়; তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউরি, তৃণমূল নেতা গগন সরকার সহ; কয়েকজন তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে; এফআইআর দায়ের করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীতে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য; তৃণমূল-কেই দায়ী করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আর এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায়, ছড়িয়ে পড়ে এই ভবিষ্যৎবানী; “সিঙ্গুরের পাঁচিল ভেঙে আগমন; বিশ্বভারতীর গেট পাঁচিল ভেঙে বিসর্জন”।