মানব গুহ, কলকাতাঃ নাম, সোনম কাপুর আহুজা। হ্যাঁ, নিজের নাম এরকমই লিখে থাকেন অনিল কাপুরের মেয়ে সোনম কাপুর। বাবা অনিল কাপুরের সারনেম; কাপুর তো তাঁর নামের পিছনে প্রথম থেকেই ছিল। দু বছর আগে ব্যবসায়ী আনন্দ আহুজাকে বিয়ে করার পরে; তিনি নামের শেষে কাপুরের পাশপাশি আহুজা লিখতেও খুব ভালবাসেন। তাঁর টুইটার পেজেও জ্বলজ্বল করছে; সোনম কাপুর আহুজা। নামের পিছনে বাবা ও বরের পদবি লাগিয়ে; এবার ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা’ ভেঙে ফেলার ডাক দিলেন; সেই সোনম কাপুর আহুজা।
ড্রাগ কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া রিয়া চক্রবর্তীর; টি-শার্টে লেখা ছিল ‘Roses are red, Violets are blue; Let’s smash Patriarchy, Me and You’। যার বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়; ‘গোলাপের রঙ লাল, বেগুনির রঙ নীল; চলো পিতৃতন্ত্র ধ্বংস করি, আমি আর তুমি’। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে; পিতৃতন্ত্রর বিরুদ্ধে এক লড়াই। ড্রাগ কেসে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ৯ জন; ৮ পুরুষ ও এক নারী। ৮ জন পুরুষ গ্রেফতার হওয়ার পরেও; সব ঠিক ছিল। একজন নারী গ্রেফতার হবার পরেই; সব দোষ হল, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার!
আরও পড়ুনঃ ইগোর লড়াইয়ে কঙ্গনার অফিস ভাঙা, উদ্ধব ঠাকরের রাজনৈতিক জীবনের চরম ভুল

সমাজবিদ্যায় পিতৃতন্ত্র হচ্ছে একটি সামাজিক ব্যবস্থা; যেখানে পুরুষেরা প্রাথমিক ক্ষমতা ধারণ করে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব, নৈতিক কর্তৃত্ব, সামাজিক সুবিধা ও সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রাধান্য স্থাপন করে। পরিবারের ক্ষেত্রে পিতা ও পিতৃতুল্যগণ নারী ও শিশুর উপর; কর্তৃত্ব লাভ করে। পিতৃতন্ত্র শব্দটি; ইংরেজি “Patriarchy” (পেট্রিয়ার্কি) এর পারিভাষিক শব্দ; এসেছে গ্রিক থেকে। এই শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে “পিতার শাসন”। আর ভারতীয় সমাজব্যবস্থা; এখন আর পিতার শাসনে চলে না। ভারতের সমাজ ব্যবস্থায় শুধু নয়; দেশের সর্বত্র এখন নারীরাও সমানতালে দেশ শাসন করছে।
সোনম কাপুর, অনিল কাপুর এবং সুনিতা কাপুর এর কন্যা; চলচ্চিত্র নির্মাতা সুরিন্দর কাপুরের নাতনি। তিনি প্রযোজক বনি কাপুর, অভিনেতা সঞ্জয় কাপুর এবং সন্দীপ মারওয়াহ-এর ভাইঝি। ২০১৮ সালে, তিনি ব্যবসায়ী আনন্দ আহুজার সঙ্গে; বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। অনেকেই অভিযোগ করেন; মাথার উপর বাবা ও ‘পুরুষতান্ত্রিক’ পরিবারের হাত আছে বলেই; অভিনয়ের কিছু না পারলেও; তিনি ফিল্ম পান। যেটাকে বলে নেপটিজম। আর যার জন্য দায়ি; এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। তখন এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা, ভেঙে ফেলার ডাক দেন নি কেন? এটাও বড় প্রশ্ন।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই; রোষের মুখে বলিউডের একটা বড় অংশ। সুশান্তের জন্য ন্যায়বিচার চেয়ে; সেভাবে মুখ খুলতে দেখা যায়নি বলিউডের সদস্যদের। অথচ মাদককাণ্ডে গ্রেফতার রিয়া চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়ালেন; বলিউডের একটা বড় অংশ। বলিউড তারকাদের সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল জুড়ে উঠল; #JusticeForRhea। সুশান্তের মৃত্যুর পর; কোথায় ছিলেন ? উঠেছে প্রশ্ন। আর ড্রাগের কারণে এক মহিলা গ্রেফতার হতেই; কেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচার? বুঝে উঠতে পারছেন না; ভারতের আমজনতা।