ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে আত্মঘাতী ছাত্র

488
ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে আত্মঘাতী ছাত্র/The News বাংলা
ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে আত্মঘাতী ছাত্র/The News বাংলা

The News বাংলা, কলকাতাঃ এও সম্ভব?! কেউ আত্মহত্যা নিয়েও পড়াশোনা করতে পারে?! এ যেন বাংলা ফিল্ম হেমলক সোসাইটির বাস্তব রুপ। তেমনটাই ঘটেছে খাস কলকাতায়।

ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা কিশোরের। এক বছর আগে ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়েও হাতের শিরা কেটেছিল সে। তখন পুলিশের সহায়তায় তাকে বাঁচানো গেলেও এবার আর বাঁচানো যায় নি।

আরও পড়ুনঃ মেঝেতে খেলছে ভাইবোন, মাথার উপর ঝুলছে বাবা মা

আত্মঘাতী যুবকের নাম অর্কপ্রভ বসু। পাঠভবন স্কুলের ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র ছিল সে। বাড়ি পাটুলি এলাকায়। তার বাবা ইন্ডিয়ান অয়েলের কর্মী। মা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় চাকরি করেন। দিদি আইনজীবী।

ছোটোবেলা থেকেই পড়াশোনাতে খুব একটা ভালো ছিল না সে। ক্লাস ইলেভেনে দুবছর ধরে পড়ার পরেও এবার ভালো রেজ়াল্ট হয়নি তার। তারপর থেকেই আরও মানসিক অবসাদের মধ্যে ছিল সে।

আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে ঢোকার আগেই নাইন এমএম পিস্তল সহ গ্রেফতার ছয়

আত্মহত্যার সময় বাড়িতে অর্ক ও তাদের পরিচারিকা ছিলেন শুধু। কোনও আওয়াজ না পেয়ে বাড়ির পরিচারিকা তার খোঁজ শুরু করে। অনেকবার দরজা ধাক্কা দেওয়ার পরও দরজা না খোলায় তিনি ফ্ল্যাটের দারোয়ানকে ডেকে আনেন। তখনই জানালা দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পায় তারা। পাটুলি থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে মৃতদেহ নামায়।

পাটুলি থানার পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যার সময় তার ল্যাপটপে আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি পেজ খোলা ছিল। দেহটি উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য অর্কর মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে গেছে পুলিশ।

আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে মুখ রক্ষা বিজেপির ‘রথ যাত্রা’র

পড়শিদের বক্তব্য, বছর খানেক আগেও এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ওই ছাত্র। সে বারও কোনও খেলা দেখে হাতের শিরা কাটে সে। তখন সময়মতো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ায় বাঁচানো গিয়েছিল অর্কপ্রভকে।

তবে গতবার ছেলের ‘আত্মহত্যার চেষ্টার’ কথা অস্বীকার করেছেন তার মা। শুক্রবার কাবেরীদেবী বলেন,’ও নিয়মিতই ওষুধ খেত। চিকিৎসকের কাছেও নিয়ে যাওয়া হত। অবসাদ থেকে যে এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে, আমরা ভাবতে পারিনি’।

আরও পড়ুনঃ আরও সাজিয়ে তোলা হবে বাঙালির প্রিয় দিঘা সমুদ্রসৈকতকে

তার চিকিৎসক সৌরভ দাস বলেন,’বছর খানেক আগে প্রথম আমার কাছে চিকিৎসার জন্য আনা হয় অর্কপ্রভকে। এর মধ্যে ওষুধে বেশ খানিকটা উন্নতিও হয়েছিল ওর মানসিক অবস্থার। এত বড় ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা অনুমান করা যায়নি। ফের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার ধাক্কাটাই হয়তো সামলাতে পারেনি ও’।

আরও পড়ুনঃ দীপিকা কি গর্ভবতী? রণবীরের সন্তানের মা হবেন দীপিকা?

এইভাবে ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে তারপর আত্মহত্যার ঘটনা খুবই আস্বাভিক। ইন্টারনেটে আত্মহত্যার নানান পদ্ধতি নিয়ে গবেষণার চিহ্নও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

তবে মনবিশেষজ্ঞরা বলছেন ইন্টারনেটে আত্মহত্যা নিয়ে পড়াশোনা করে তারপর আত্মহত্যার ঘটনা এটা শুনতে খুবই আস্বাভিক হলেও এই ধরণের ঘটনা বিশ্ব জুড়েই বাড়ছে। ভারত এবং বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ধরণের ঘটনা বাড়ছে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন