সবার সামনে শিক্ষক শিক্ষিকা ও স্কুল পরিদর্শককে ধমক দিয়ে শিক্ষার পাঠ মন্ত্রীর

462
সবার সামনে শিক্ষক শিক্ষিকা ও স্কুল পরিদর্শককে ধমক দিয়ে শিক্ষার পাঠ মন্ত্রীর/The News বাংলা
সবার সামনে শিক্ষক শিক্ষিকা ও স্কুল পরিদর্শককে ধমক দিয়ে শিক্ষার পাঠ মন্ত্রীর/The News বাংলা

The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ ‘আসি যাই মাইনা পাই, কাজের বেলা গুরুত্ব নাই’। শনিবার এই ভাষাতেই স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কটাক্ষ ও স্কুল পরিদর্শককে ধমক দেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। প্রকাশ্যেই সবার সামনে স্কুল পরিদর্শক ও স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বকাঝকা করে শিক্ষার পাঠ দিলেন মন্ত্রী।

উত্তরবঙ্গ উৎসবকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ির সহ আশেপাশের বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষদের নিয়ে এক বৈঠকে দেরীতে আসায় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের কাছে তিরস্কৃত হতে হল জেলা স্কুল পরিদর্শক তপন বসুকে। পর্যটন দপ্তরে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বৈঠকে সকলের সামনেই তাঁর দেরি করে আসা নিয়ে তাঁকে একপ্রকার ভর্ৎসিত করলেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুনঃ

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে এক হিন্দু নারী

ভারতের কৃষকের মেয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ

ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ‘ভাবনার বিপ্লব’ ভাবনা কস্তুরীর হাত ধরে

আর এই ঘটনায় কোনো কিছু বলার মত অবস্থাতেই ছিলেন না জেলা স্কুল পরিদর্শক তপন বসু। কার্যত মাথা নিচু করেই তাঁকে সব স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সামনেই মন্ত্রীর বকাঝকা হজম করতে দেখা গেল।

শনিবার শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে মৈনাক টুরিস্ট লজ অর্থাৎ পর্যটন দপ্তরের কার্যলয়ে শিলিগুড়ির বাংলা মিডিয়াম বিশেষ করে ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ডের অধীনে স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা সহ স্কুল ও কলেজের আধিকারিকদের নিয়ে উত্তরবঙ্গ উৎসবের আগে একটি মিটিং করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব।

কিন্তু মিটিং যখন প্রায় শেষের পথে তখন তড়িঘড়ি সেখানে আসেন জেলা স্কুল পরিদর্শক তপন বসু। তাঁকে দেখেই রীতিমত অসন্তুষ্ট ও ক্ষুব্ধ হয়েই গৌতম দেব তাঁকে ধমক দেন। তাঁকে সবার সামনেই প্রশ্ন করেন, এমন একটি সরকারী ও গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে দেরী করে এলেন তাহলে ডিউটিতেও নিশ্চয়ই দেরী করে ঢোকেন? আপনার কাছ থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষক শিক্ষিকারা কি শিক্ষা নেবে?

আরও পড়ুনঃ

জেলাশাসকের স্ত্রী কাণ্ডে অপসারিত পুলিশ অফিসার পেলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী সাহসী পুরস্কার’

সিবিআই থেকে দমকলে বদলি, প্রতিবাদে চাকরি ছাড়লেন আইপিএস

সেই সঙ্গে তিনি স্কুল পরিদর্শককে আরও কটাক্ষ করে সবাইকে বলেন, “এই ধরনের মানুষ যদি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় থাকে তাহলে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার কি হবে? আপনাদের কাছ থেকেই তো সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকারা শেখে। তারাও বেশিরভাগই আসি যাই মাইনা পাই”। শিলিগুড়ির বেশ কিছু স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকারা দেরি করে আসেন, অভিযোগ আছে মন্ত্রীর কাছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা শিক্ষাটাকে প্রাধান্য দেই। আসলে আপনারা সরকারের মাইনে তো মাসের এক তারিখে পেয়েই যান, তাই শিক্ষায় অত গুরুত্ব দেন না”। এরপরই মন্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে, স্কুলের বেতন যে মাসের পাঁচ তারিখে হয় সেটা ধরিয়ে দেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।

আরও পড়ুনঃ

বাংলায় দুর্গা পুজো বন্ধ করার চক্রান্ত করছে মোদীর বিজেপি, মারাত্মক অভিযোগ মমতার

আয়কর দফতরের নোটিশ, মাথায় হাত কলকাতার পুজো উদ্যোক্তাদের

তাতেই মন্ত্রী আরও বিরক্ত বোধ করে পাল্টা তাদের ‘সার্ভিস বুক ঠিক থাকলে মাইনা ঠিক হবে’ বলে চুপ করিয়ে দেন। এদিকে সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকা ও অন্যান্য সকলের সামনে কথাগুলো শুনে তপনবাবু মাথা নিচু করে বসে থাকেন। মন্ত্রীর কাছে তিরস্কৃত হয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারাও।

এর পড়েই গৌতম দেব মিটিং শেষ করে চলে যান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, “ভর্ৎসনা নয়। আমি স্কুল এডুকেশনের কেউ না। আমি ভর্ৎসনা করতে পারি না। শুধু ওনাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করলাম মাত্র”।

মন্ত্রীর কাছে অপমানিত হওয়ার পর শিক্ষক শিক্ষিকা ও স্কুল পরিদর্শকের মধ্যে সময় সচেতনতা ফিরবে কি? প্রশ্ন অনেকের। কেউ কেউ আবার প্রশ্ন তুলেছেন, এইভাবে প্রকাশ্যে শিক্ষক শিক্ষিকা ও স্কুল পরিদর্শককে বকাঝকা করে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের হাতে আরও দুর্বিনীত হবার অস্ত্র তুলে দিলেন না তো মন্ত্রী?

আরও পড়ুনঃ

Exclusive: জাতীয় সংগীত এর অপেক্ষা না করেই মঞ্চ ছেড়ে বিতর্কে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতার বাছাইয়ে কারা হবেন বাংলার ৪২টি লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী

মোদীর প্রকল্পে আর টাকা দেবেন না মমতা, কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে

একদিনে বহিষ্কৃত দুই তৃণমূল সাংসদ, দিদিকে ছেড়ে মোদীর দলে আর কে কে

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন