ভোটের আবেগেই তৃণমূলের হয়ে প্রচার, দেশে ফিরে ক্ষমা চাইলেন ফিরদৌস

411
দেশে ফিরে ক্ষমা চাইলেন ফিরদৌস/The News বাংলা
দেশে ফিরে ক্ষমা চাইলেন ফিরদৌস/The News বাংলা

রায়গঞ্জে কানহাইয়ালাল আগরওয়ালের হয়ে তৃণমূলের ভোট প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা ফিরদৌস। তৃণমূলের তরফে এটাকে চমক বলা হলেও বিদেশী নাগরিক হয়ে কিভাবে ভারতের ভোট প্রচারে অংশ নিচ্ছেন, সেই বিষয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। তারপর জল গড়ায় অনেকদূর। তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাঁর বাণিজ্য ভিসা বাতিল করে তাঁকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয় ভারত সরকার। এবার দেশে ফিরে আবেগঘন ক্ষমা চাইলেন ফিরদৌস।

আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের হয়ে প্রচার করে ভারতের কালো তালিকায় বাংলাদেশী অভিনেতা ফিরদৌস

একজন বিদেশী হয়ে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ তিনি কিভাবে করতে পারেন, তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চলছিল বিস্তর বিতর্ক। সমালোচনার মুখে পড়ে শীঘ্রই ফিরদৌসকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন। তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করে তাঁর বাণিজ্য ভিসা বাতিল করে তাঁকে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয় ভারত সরকার। এরপরেই ভারত ছাড়তে বাধ্য হন ফিরদৌস।

আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের প্রচার করায় ফেরদৌসকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের

দেশে ফিরেই এই ঘটনা নিয়ে নিজের পক্ষে এক লিখিত বিবৃতি দেন অভিনেতা ফিরদৌস। সেখানে তিনি ভোটের আবেগেই তৃণমূলের হয়ে প্রচার, এমন কথাই বলেছেন।

আসুন দেখে নি তাতে কি বলেছেন অভিনেতা
আমি চিত্রনায়ক ফেরদৌস। অভিনয় শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয় শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সকলের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভাল লাগে আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। আবার ভারত বহু কৃষ্টি-কালচারের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ একটি দেশ।

আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের ভোট প্রচারে বাংলাদেশী নায়ক, কড়া ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় সরকার

ফিরদৌস আরও বলেন
১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ হিসাবে ভারতের অবদান আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। পাশাপাশি ভারতের জনগণের ত্যাগ-তিতিক্ষা আমাদের চিরঋণী করে রেখেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে আমার সম্পর্ক বহুদিনের। এখানের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেক শিল্পী, সাহিত্যিক আমার বন্ধু। যাদের সাথে আমি সবসময়ে হৃদ্যতা অনুভব করি। এজন্য বিভিন্ন সময় কারণে অকারণে আমি এখানে চলে আসি।

আরও পড়ুনঃ পুরুলিয়ায় আবার বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার

ফিরদৌস আরও বলেন
ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সাড়া বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সকলের মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবাগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সাথে অংশগ্রহণ করি।

আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঝাঁটা মেরে এলাকা থেকে তাড়ানোর ফতেয়া তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রীর

ফিরদৌস আরও বলেন
এটা পূর্বপরিকল্পনার কোন অংশ ছিল না। শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোন বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সকল রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

আরও পড়ুনঃ চোপড়া বাস স্টান্ডে বাইক বাহিনীর হাতে আক্রান্ত ভোটাররা

ফিরদৌস আরও বলেন
আমি আগেও বলেছি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা অগাধ। সেই ভালোবাসা আমাকে আবেগ তাড়িত করেছে। আমি বুঝতে পেরেছি, আবেগের বশবর্তী হয়ে সহকর্মীদের সাথে এই নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করাটা আমার ভুল ছিল। যেটা থেকে অনেক ভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং অনেকে ভুলভাবে নিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ বাংলায় দ্বিতীয় দফার ভোটেও সব বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী, ফের ঝামেলার আশঙ্কা

ফিরদৌস আরও বলেন
আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বধীন দেশের নাগরিক হিসাবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনভাবেই ঔচিত্য নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রর্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলে আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

আরও পড়ুনঃ ফিরদৌসের পর বিপাকে পড়তে চলেছেন বাংলাদেশের আরেক অভিনেতা

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন