সত্যজিৎ রায় এর স্ক্রিপ্ট চুরি করে ফিল্ম বানিয়ে হলিউডে নাম করেছিলেন স্পীলবার্গ

624
সত্যজিৎ রায়কে হলিউড থেকে করা হয়েছিল চরম বঞ্চনা/The News বাংলা
সত্যজিৎ রায়কে হলিউড থেকে করা হয়েছিল চরম বঞ্চনা/The News বাংলা

১৯৬০ সালের শেষের দিকে ভারত-আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে একটি সিনেমা বানানোর চেষ্টা হয়; পরিচালনায় প্রবাদ প্রতিম সত্যজিৎ রায়। প্রস্তাবিত সিনেমাটি ছিলো একটি সায়েন্স ফিকশন মুভি; নাম ‘দি এলিয়েন‘; সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল মার্লন ব্র্যান্ডো এবং পিটার সেলার্সের।

এই গল্পের স্ক্রিপ্ট লেখা হয়েছিল সত্যজিত রায়ের ‘বঙ্কুবাবুর বন্ধু‘ গল্প অবলম্বনে; সিনেমাটি পরিচালনা করার কথা ছিল সত্যজিৎ রায়ের; হলিউডের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কলাম্বিয়া পিকচার্স রাজী হয়েছিলো সহ-প্রযোজনা করতে।

আরও পড়ুন অভিনয় জীবনে প্রথমবার রূপান্তরকামীর চরিত্রে অমিতাভ বচ্চন

কিন্তু দুঃখজনক ভাবে এই সিনেমা নিয়ে নোংরা খেলা শুরু হয়ে যায়; সত্যজিতের কাহিনিটি নিয়ে হলিউডের কলম্বিয়া পিকচার্স ‘দি এলিয়েন’ নামে একটি ছবি বানাতে কাজ শুরু করে ৭০ এর দশকে;
হলিউডে সত্যজিৎয়ের প্রতিনিধি ছিল মাইক উইলসন; সে এই গল্পের কপিরাইট চুরি করে বসে।

তারপর সত্যজিৎ রায় হঠাৎ জানতে পারেন যে কাহিনীটির পেটেন্ট করে ফেলা হয়েছে; মাইক স্ক্রিপ্ট রচনায় অবদান না রেখেই নিজেকে সহ-লেখক পরিচয় দিয়ে সেটিকে কপিরাইট করে ফেলেন এবং কপিরাইটের টাকা থেকে সম্পূর্ণরূপে সত্যজিৎকে বঞ্চিত করেন।

আরও পড়ুন স্কুলে ছুটি কত দিনের, নবান্নের ঘোষণায় গোটা বাংলার শিক্ষা জগতে আলোড়ন

এর কিছু পর ১৯৮২ তে স্টিভেন স্পিলবার্গ একটি সিনেমা বানান; যার লেখক হিসাবে উল্লেখ করা হয় মেলিসা ম্যাথিসন কে; আর সিনেমার নাম দেওয়া হয় ‘ইটি দি এক্সট্রা টেরিস্ট্রিয়াল‘ সংক্ষেপে ‘ইটি’; ইউনিভার্সাল পিকচার কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত এই মুভিটি ছিল ব্লকবাস্টার হিট এবং টানা দশ বছর ধরে ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ আয় করা মুভি।

সত্যজিৎ রায় দাবি করেন এই সিনেমাটি তাঁরই স্ক্রিপ্ট চুরি করে বানানো; ছবির মূল ধারনাটি আসলে সত্যজিত রায়ের কাহিনি থেকে চুরি করা; সত্যজিৎ রায়ের দাবী অস্বীকার করেছিলেন স্পীলবার্গ; কিন্তু বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ করে যে স্পিলবার্গ সত্য বলেন নি।

স্পিলবার্গ স্বীকার না করলেও সত্যজিতের মৌলিক কাহিনী ‘বঙ্কুবাবুর বন্ধু’ গল্পের আমেরিকান রূপটিই ইটি যেখানে ইটি ছিল মি: আং আর ছেলেটার নাম ছিল হাবা (এলিয়েট), এলিয়েনের মহাকাশযান নামার স্থানটি ক্যালিফর্নিয়ার জঙ্গল না, ছিল বাংলার এক গ্রামের পুকুর পাড়। এমন কি এলিয়েনের আঙুলের সংস্পর্শে ফুল ফোটানোর কথাও সত্যজিতের কাহিনীতে ছিল।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন