ভারত-পাক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই কি কারণে বন্ধ হল

508
ভারত-পাক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই কি কারণে বন্ধ হল/The News বাংলা
ভারত-পাক ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই কি কারণে বন্ধ হল/The News বাংলা

ফেব্রুয়ারিতেই দুই পারমাণবিক ক্ষমতাধর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। শুরু হত ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধ। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন সহ মার্কিন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো গেছে বলেই জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। সংবাদসংস্থা রয়টার্স সূত্রে এমনটাই খবর।

নয়াদিল্লি, ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্র অনুসারে, উত্তেজনার এক পর্যায়ে ভারত পাকিস্তানে অন্তত ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের হুমকি দেয়। অন্যদিকে এই ধরনের কোন কিছু হলে ভারতের দিকে তিন গুণ বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে ইসলামাবাদ জানিয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ মমতা কি পাকিস্তানের কণ্ঠ, বিতর্কিত প্রশ্ন নিৰ্মলার

দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুটির পাল্টাপাল্টি হুমকির মধ্যে পরিস্থিতির হঠাৎ অবনতি ও একটি যুদ্ধের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। ভারত-পাকিস্তানের অব্যাহত সংঘাতের কারণে ভারত-পাক সীমান্ত বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানের একটিতে পরিণত হয়েছে বলেই মত মার্কিন প্রশাসনের।

তবে শেষ পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কেবল হুমকি বিনিময় হয়েছে। দেশ দুটি প্রচলিত অস্ত্র ছাড়া কোনো ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেনি। তা সত্ত্বেও এ উত্তেজনায় ওয়াশিংটন, বেইজিং ও লন্ডনের সরকারি মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল বলেই জানিয়েছে সংবাদসংস্থা রয়টার্স।

যে ঘটনাগুলোর সূত্র ধরে ২০০৮ সালের পর থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংকট ঘনিয়ে এসেছিল এবং দুই পক্ষকে পিছিয়ে আনতে যেসব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো সমন্বিত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে রয়টার্স।

আরও পড়ুনঃ ম্যায় ভি চৌকিদার হু, আমজনতাকে ভোটের স্লোগান জানিয়ে দিলেন মোদী

সাম্প্রতিক এই সংকটের সূত্রপাত ঘটে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর কনভয়ে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী হামলায় প্রায় ৪৯জন সেনা শহিদ হওয়ার পর।

এর প্রতিক্রিয়ায় ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। যদিও অঞ্চলটিতে কোনো জঙ্গি শিবির থাকার কথা অস্বীকার করে ইসলামাবাদ। যদিও পরে ইতালীয় ও মার্কিন সংবাদে প্রায় ২৫০ জন জঙ্গি মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

বালাকোটে হামলার পরদিন পাকিস্তানের বিমান ভারত সীমান্তে ঢুকে পড়লে, পাক- ভারতের বিমান বাহিনী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। ১৯৭১ সালের পর দেশ দুটির মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ধরনের সংঘর্ষ ঘটে। পাকিস্তান পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একটি ভারতীয় বিমানকে ভূপাতিত করে এবং এক বৈমানিককে আটক করে।

আরও পড়ুনঃমসজিদে ঢুকে মুসলিমদের গুলি করে হত্যা করা নিয়ে বিস্ফোরক তসলিমা

ভারতও একটি পাক এফ ১৬ বিমান ধ্বংস করে দেয়। এই ঘটনার পর ভারতে পাকিস্তানবিরোধী ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পায়। এরপরেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত, মার্কিন প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে রয়টার্স।

২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) প্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। দোভাল জানান, বৈমানিককে আটক করা হলেও ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ প্রচার থেকে পিছিয়ে আসবে না। ভারত সরকারের একটি সূত্র ও কথোপকথন সম্পর্কে অবগত পশ্চিমের এক কূটনীতিক রয়টার্সকে এমনটাই জানিয়েছেন বলে দাবি।

দোভাল আইএসআই প্রধানকে জানান, সেসব জঙ্গিগোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটি থেকে অবাধে তৎপরতা চালাচ্ছে, ভারত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং এ তৎপরতা আরো বাড়াতে প্রস্তুত নয়াদিল্লি।

আরও পড়ুনঃ ২০২৫ সালের পর ভারতের অংশ হবে পাকিস্তান, ঘোষণা আরএসএস নেতার

সে সময় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ভারতের হুমকি সম্পর্কে পাকিস্তানের এক মন্ত্রী ও ইসলামাবাদে অবস্থানরত এক পশ্চিমি কূটনৈতিক পৃথকভাবে নিশ্চিত করেছেন।

কে দিয়েছে বা কাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে না জানানো হলেও পাকিস্তানি মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ চলার সময় উভয় দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ছিল। এমনকি এখন পর্যন্ত যোগাযোগ রয়েছে।

এদিকে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে এবং পরদিন ভোরে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোল্টন দোভালের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বলেই নয়াদিল্লির এক পশ্চিমি কূটনৈতিক ও ভারতীয় কর্মকর্তা জানান।

আরও পড়ুনঃ মোদীর সঙ্গে সবাই চৌকিদার, অদ্ভুত প্রচার বিজেপির

পরবর্তী সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে উভয় পক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা করেন। মার্কিন প্রশাসন ও দুই দেশে থাকা মার্কিন কূটনীতিকদের উদ্ধৃত করে এমনটাই দাবি করেছে সংবাদসংস্থা রয়টার্স।

তবে এই খবর একেবারেই ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত সরকারের এক মুখপাত্র। বলেছেন, নিজের মনের মত গল্প লিখেছে ওই সংবাদসংস্থা। মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে কোন বাধা দেবেন না বলেই জানিয়েছেন, মনে করিয়ে দিয়েছেন ওই মুখপাত্র।

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন