পাকিস্তান ছাড়ার আগে অভিনন্দন বর্তমানের পাশে ভদ্রমহিলা কে

919
পাকিস্তান ছাড়ার আগে অভিনন্দন বর্তমানের পাশে ভদ্রমহিলা কে/The News বাংলা
পাকিস্তান ছাড়ার আগে অভিনন্দন বর্তমানের পাশে ভদ্রমহিলা কে/The News বাংলা

পাকিস্তান ছাড়ার আগে অভিনন্দন বর্তমানের পাশে ভদ্রমহিলা কে? শুক্রবার রাত থেকেই এই প্রশ্ন গোটা ভারত জুড়ে।
শুক্রবার বিকাল থেকেই সবার নজর ছিল ওয়াঘা-আটারি সীমান্তের দিকে। রাত ৯.১০ এ ওয়াঘা সীমান্তের পাক ভূখন্ডে প্রথমবারের মতো দাঁড়িয়ে খাকতে দেখা গেল ভারতের উইন কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে। অভিনন্দন বর্তমানের একপাশে পাক রেঞ্জার্স এর এক অফিসার আর এক ভদ্রমহিলা। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত উনি ছিলেন এই ভারতীয় বায়ুসেনার সঙ্গে। কে উনি? প্রশ্ন আসমুদ্র হিমাচল এর।

আরও পড়ুনঃ ইমরান খানের শান্তিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ফের সেনা শিবিরে পাক জঙ্গি হানা

শুক্রবার ভারতীয় ঘড়িতে তখন রাত নটা বেজে দশ মিনিট। ওয়াঘা সীমান্তের পাক ভূখন্ডে প্রথমবারের মতো দাঁড়িয়ে খাকতে দেখা গেল ভারতের উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে। একজন প্রকৃত বায়ুসেনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। পরনে সাদা জামা, ব্লেজার, নিখুঁত ফিটিংস প্যান্ট, পায়ে জুতো। আর তাঁর সেই বিখ্যাত বিরাপ্পন গোঁফ। ডান চোখে কালসিটে পড়ে গেছে। রক্তও জমেছে চোখের কোনায়। তবু কি দীপ্ত ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা।

আরও পড়ুনঃ ভারতকে হেয় করতে পাকিস্তানের মিথ্যা দাবিতে বেঘোরে প্রাণ গেল পাক পাইলটের

তখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু ওয়াঘা-আটারি সীমান্তে বিকেল থেকে অপেক্ষা করে থাকা সাধারণ মানুষ, এমনকি সাংবাদিকদেরও ধৈর্য এর বাঁধ ভেঙেছে। কিন্তু বীর সৈনিকের ব্যক্তি উচ্ছ্বাস যে প্রোটোকল বিরুদ্ধ তা অভিনন্দন ক্ষণে ক্ষণে জানান দিলেন। এভাবেই কেটে গেল আরও দশ মিনিট। অবশেষে একাই ওয়াঘা গেট পেরিয়ে পাক ভূখন্ডে পেরিয়ে ভারত ভূখন্ডে এলেন তিনি। শেষ হল একটি হাইপ্রোফাইল আন্তর্জাতিক ক্লাইমেক্স।

আরও পড়ুনঃ জওয়ানদের হত্যার ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র পাক আইএসআইয়ের

তবু প্রশ্ন একটি রয়ে গেল আপমর দেশবাসীর কাছে। পাকিস্তানে অভিনন্দনের পাশে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকা শেষ সঙ্গীনিটি কে? যিনি পাকিস্তানের ভূখন্ডে একেবারে অন্তিম মূহুর্তে ভারতীয় উইং কম্যান্ডারের ডান পাশে ছিলেন? একেবারে গা ঘেঁষে মহিলার দাঁড়ানোর মধ্যেও ছিল অভিনন্দনের জন্য এক অনবদ্য সম্মানের শিষ্টাচার।

আরও পড়ুনঃ মুখে শান্তির বাণী, কাশ্মীর সীমান্তে পাক গোলায় মায়ের সঙ্গে দুই শিশুর মৃত্যু

কে উনি? অনেকে ভাবলেন তাঁর স্ত্রী। যারা ওঁর স্ত্রীর ছবি দেখেছেন তাঁরা ভাবলেন উনি কি অভিনন্দনের নিকট আত্মীয়া বা নিছক পরিচিতা? কি পরিচয় তাঁর? বন্দি অভিনন্দনকে মুক্তি দিতে, ভারতের হাতে তুলে দিতে এসেছেন কে? কে তিনি? ভদ্রমহিলার ছবি মূহুর্তে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া সহ বিশ্বের তাবড় সংবাদমাধ্যমে।

আরও পড়ুনঃ জঙ্গিদের মদতদাতা পাক প্রধানমন্ত্রীকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেবার দাবি

এই একটাই প্রশ্ন সবার মনের খোঁচা দিচ্ছে। কে তিনি? আসলে এই মহিলার নাম ফারিহা বুগতি। তিনি পাকিস্তান বিদেশ মন্ত্রকের ভারত বিষয়ক ডিরেক্টর। তিনি একাধারে ডক্টরেট এবং এফএসপি পদমর্যাদা সম্পন্ন আমলা। ভারতের যেটা আইএফএস, পাকিস্তানের সেটাই এফএসপি। এই ফারিহা বুগতিই পাকিস্তানে বন্দি কুলভূষণ যাদবকে নিয়ে পাকিস্তানের তরফে ভারতের সঙ্গে শলাপরামর্শ জারি রেখে চলেছেন। কুলভূষণের সঙ্গে ইসলামাবাদে গিয়ে দেখা করার সময় তাঁর মা ও স্ত্রীর সঙ্গ দিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ ভারতকে সাইকোলজিক্যাল ব্ল্যাকমেল, মুখ ও মুখোশের আড়ালে পাকিস্তান

পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের ইতিহাসে তিনিই হলেন প্রথম বালুচিস্তানের মহিলা যিনি এই পদমর্যাদায় নিযুক্ত হয়েছেন। ২০০৫ সালে তিনি পাকিস্তান বিদেশ মন্ত্রকে যোগ দেন এফএসপি আধিকারিক হিসেবে। তিনি আমলা হিসেবে পাকিস্তানে ক্রমেই জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তাঁর নিপুল কর্মদক্ষতায় ২০০৭ সালেই পাকিস্তান বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিভাগের সহ সচিবের দায়িত্ব পান।

আরও পড়ুনঃ ভারতীয় বায়ুসেনা অভিনন্দনের স্ত্রী সাজিয়ে নোংরা রাজনীতি মোদী বিরোধীদের

২০১৩ সালে তিনি জেনেভা সম্মেলনে যোগ দেন পাকিস্তানি ইউএন মিশনের প্রথম পাক মহিলা সচিব হিসেবে। প্রথমে ইতালী ও পরবর্তী পর্যায়ে মরক্কোতে পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তিনি শুধু ভারত বিষয়ক ডিরেক্টর হিসেবেই নন, আমেরিকা বিষয়ক ডিরেক্টর ও রাষ্ট্রপুঞ্জ বিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেল পদেও যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করেছেন।

আরও পড়ুনঃ কাশ্মীরে লড়ছে মরছে সেনা আর তাঁদের নিয়ে চলছে মুনাফার মারপিট

ভারত পাক সম্পর্কের সব প্যাঁচালো বিষয়, কঠিন ও শক্ত বিষয় এখন তাঁরই নরম হাতে। সেই ফারিহা বুগতি যিনি অভিনন্দনকে পাশে নিয়ে কয়েক কদম হাঁটলেন। ওয়াঘা সীমান্তের একেবারের শেষ প্রান্তে। সম্মান ও সৌজন্যতার সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্রর যুদ্ধবন্দিকে মুক্তির পথ দেখালেন। এগিয়ে যাচ্ছেন অভিনন্দন। এবার অবশ্য এককভাবে। এই অতিক্রম করলেন ভারতের মাটিতে অভিনন্দন। ওয়াঘা আটারির ফটক পেরিয়ে।

আর ওয়াঘা সীমান্তের ওপারে তখনও দাঁড়িয়ে ফারিহা বুগতি। শেষ পর্যন্ত তিনি শুধুই দেখছেন অভিনন্দনকে। ভারত পাক সম্পর্কের এক অদ্ভুত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাক্ষী হয়ে রইলেন ফারিহা বুগতি।

আরও পড়ুনঃ পাকিস্তানে ভারতীয় সেনার সাহস ও বীরত্ব দেখিয়ে দেশে ফিরলেন অভিনন্দন
আরও পড়ুনঃ যা হয়েছে তা ট্রেলার, আসল ফিল্ম এখনও বাকি বললেন নরেন্দ্র মোদী
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তানে ভারতের বিমানহানার সময় জন্ম নবজাতকের নাম মিরাজ

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন